Thu. May 16th, 2024

ফিটকিরি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমানে সচারাচর সবার ঘরে এটা দেখা না গেলেও এক সময় প্রায় সবার ঘরেই এই জিনিস দেখা যেত। বর্তমানে সেলুনে ফিটকিরি দেখতে পাওয়া যায়। এখন ফিটকিরি সঠিক ব্যবহার অনেকেই জানে না। এই পোস্টে ফিটকিরি সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো।

১. রক্ত পড়া বন্ধ

সেলুনে হয়তো আমরা দেখেছি এই বিষয়টি যে সেভ করতে গিয়ে মুখ বা গলার কোথাও কেটে গেলে সেখানে ফিটকিরি ঘসে দেওয়া হয়। শুধু গলা নয় শরীরের যেকোনো স্থানে কেটে গেলে ফিটকিরি চূর্ণ বা গুঁড়া লাগিয়ে দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হবে যাবে।

Read more: ঠোঁট গোলাপি করার উপায়

২. রূপচর্চায়

রূপচর্চায় ফিটকিরির ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেই জানে না। তবে ফিটকিরির ব্যবহার রূপচর্চার অনেক কাজে এবং অনেক ভাবে ব্যবহার করা যায়।

  • ত্বকের ব্রণের ওপর ফিটকিরি ঘষলে, ব্রণ দ্রুত শুকিয়ে যায়।
  • মুখের জীবাণু ও দুর্গন্ধ দূর করার জন্য পানিতে ফিটকিরি মিশিয়ে কুলকুচি করুন।
  • উকুন তাড়াতে ফিটকিরি গুঁড়ার সঙ্গে পানি মিশিয়ে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন৷ তারপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিলেই উকুন দূর হবে।
  •  মুখের ভিতর ঘা হলে সেইখানে ফিটকিরি লাগান, প্রাথমিক অবস্থায় একটু ঝালা করলেও দ্রুত ঘা শুকিয়ে যাবে। মুখে ফিটকিরি লাগিয়ে মুখের লালা গিলে বা খেয়ে ফেলবেন না।
  • চেহারার বলি রেখা দূর করতে ফিটকিরি ব্যবহার করা যায়। এক টুকরো ফিটকিরি জলে ভিজিয়ে তা মুখে ভাল করে ঘষুন। তার পরে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

৩. পানি বিশুদ্ধ করতে ফিটকিরি

ফিটকিরি দিয়ে পানি পরিষ্কার বা পানিতে থাকা ময়লা দূর করার যায় এটা অনেকেই শুনেছি। পানি পরিষ্কার করে এক কলসি পানিতে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রেখে দিলে পানির ভেতরে থাকা ময়লাগুলো তলানিতে স্তর হয়ে জমে। এরপর পাত্রের উপর থেকে পরিষ্কার পানি সংগ্রহ করে তলানির পানি ফেলে দিতে হবে।

৪. টনসিলে আরাম

অতিরিক্ত ঠান্ডা গলা ব্যাথা হলে বা গ্ল্যান্ড ফুলে গেলে গরম পানিতে এক চিমটি লবণ ও ফিটকিরি গুঁড়া মিশিয়ে কয়েকবার গার্গল করলে বেশ আরাম পাবেন।

৫. দুর্গন্ধ দূর করতে

হঠাৎ করে এয়ার ফ্রেশনার শেষ হয়ে গেলে বা হাতের কাজ এয়ার ফ্রেশনার না থাকলে ফিটকিরি গুঁড়া ব্যবহার করে পারেন। এছাড়া ফিটকিরি গুঁড়ার সাথে গন্ধরস বা মস্তকি (এক ধরনের গাছের আঠা বিশেষ) মিশিয়ে ডিওড্র্যান্ট হিসাবে নিজের শরীর লাগাতে পারেন।

ফিটকিরি ব্যবহারে যেমন উপকার আছে তেমনি এর অতিরিক্ত বা মাত্র অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার আমাদের ক্ষতি হয়ে পারে। ফিটকিরি পানির পিএইচ হ্রাস করে এবং অতিরিক্ত ব্যবহারে পানিতে বিষাক্ত অ্যালুমিনিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়। ফিটকিরি মিশ্রিত পানি চোখের সংস্পর্শে এলে চোখ জ্বালা করে। পানিতে ফিটকিরি ব্যবহার করলে পানির কিছু জীবাণু যেমন—ব্যাকটেরিয়া ও প্যারাসাইট ধ্বংস হলেও ভাইরাসের জীবাণু ধ্বংস করতে পারে না। ফলে ফিটকিরির সাহায্যে পরিশোধিত হওয়া পানি খেলে টাইফয়েড, ডায়রিয়া, আমাশয় ও কৃমি সংক্রমণ জাতীয় রোগ থেকে রেহাই পাওয়া গেলেও হেপাটাইটিস ‘এ’ ও ‘ই’ ভাইরাসজনিত রোগ জন্ডিস থেকে রেহাই পাওয়া যায় না।

ফিটকিরি সম্পর্কিত তথ্য গুলো আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *