WordPress বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট তৈরির সফটওয়্যার বা CMS. বর্তমানে অনলাইনে প্রায় ৬০% ওয়েবসাইট WordPress দিয়ে তৈরি করা হয়।
WordPress দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য থিম একটা গুরুত্বপূর্ণ এবং আবশ্যক জিনিস। অনলাইনে WordPress এর জন্য তিন ধরনের থিম পাওয়া যায়।
১. ফ্রি থিম
২. প্রিমিয়াম বা পেইড থিম
৩. ক্র্যাক থিম
এই তিন ধরনের থিম এর নানা সুবিধা অসুবিধা রয়েছে। এই পোস্টে আমি এই তিন ধরনের থিম সম্পর্কে আলোচনা করবো এবং জানানোর চেষ্টা করবো এই তিন ধরনের থিম এর সুবিধা অসুবিধা সমূহ।
WordPress ফ্রী থিম এবং প্রিমিয়াম থিম এবং ক্র্যাক থিমের মধ্যে পার্থক্য কি?
১. ফ্রি থিম
Free theme এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণ ফ্রি। WordPress এ আপনি হাজার হাজার ফ্রি থিম পেয়ে যাবেন। আর এই সকল ফ্রি থিম আপনি যেকোন ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারবেন। ফ্রি হওয়ায় আপনি নিয়মিত আপডেট গুলো ফ্রিতেই পেয়ে যাবেন। ফ্রি থিমের আরো একটা সুবিধা হলো এইগুলো সেট করা এবং সাজানো খুব সহজ।
ফ্রি থিম এর অসুবিধা হল আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফিচার এখানে পাবেন না। এছাড়াও customization এর সুবিধা নেই বললেই চলে। অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ফিচার পাওয়া জন্য আপনাকে third party plugins ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে। এছাড়াও থিম কাষ্টমাইজ বা থিমে কোনো সমস্যা থাকলে, টুকটাক সাহায্যের প্রয়োজন পড়লে তার জন্য ডেভেলপারদের সাহায্য পাবেন না।
প্রিমিয়াম ওয়েবসাইটে বা কোনো প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি থিম মোটেও উপযোগী নয়। ফ্রি থিম দেখা তেমন সুন্দর এবং সাজানো হয় না তাই প্রিমিয়াম ওয়েবসাইট বা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে এই সকল ফ্রি থিম ওই সকল ওয়েবসাইটের দর্শকদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ফ্রি থিম গুলো ডাউনলোড করার জন্য WordPress এর অফিসিয়াল থিম ডিরেক্টরি এবং সেরা মার্কেটপ্লেস হচ্ছে WordPress.org. এখানে আপনি হাজার হাজার ফ্রি থিম পেয়ে যাবেন। এখান থেকে ডাউনলোড করে আপনি সেগুলো আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারবেন।
২. প্রিমিয়াম বা পেইড থিম
প্রিমিয়াম থিমের সুবিধা হচ্ছে এটাতে আপনি অনেক এডভান্স ফিচার পাবেন। যা ওয়েবসাইটে লুক এবং ফাংশন এ অনেক পরিবর্তন আনবে, যার ফলে ওয়েবসাইট অনেক সুন্দর এবং হাই কোয়ালিটির মনে হবে। আপনি টুকটাক সমস্যার সমাধানের জন্য সরাসরি ডেভেলপারদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। প্রিমিয়াম থিমের আরো একটা সুবিধা হলো আপনি অনেক প্রয়োজনীয় প্রিমিয়াম plugins পেয়ে যাবেন যা থিমের সাথে সহজে সংযুক্ত হবে, ফলে আপনাকে তৃতীয় পক্ষের কোনো plugins ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়বে না।
আর প্রিমিয়াম থিমের অসুবিধা হল এগুলো আপনাকে কিনে নিতে হবে। একটা প্রিমিয়াম থিমের দাম প্রায় ৪০ থেকে শুরু করে ১০০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রথম অবস্থায় এটা কেনা অনেকের কাছেই সম্ভব না। কিন্তু আমি বলবো প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের সর্বদা প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করা উচিত।
প্রিমিয়াম থিম কনা জন্য অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে। কিন্তু এদের মধ্যে themeforest.net সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত। আপনি এইখানে হাজার হাজার প্রিমিয়াম থিম পেয়ে যাবেন। এই ওয়েবসাইট থেকে কোন থিম বা প্লাগিন কিনলে তা আপনি লাইফ টাইম ব্যবহার করতে পারবেন। অনন্যা মার্কেটপ্লেস থেকে থিম বা প্লাগিন কিনলে প্রতি বছর ওই মার্কেটপ্লেস কে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিতে হয় রিনিউ করার জন্য কিন্তু themeforest.net থেকে থিম বা প্লাগিন একবার কিনলে আপনি লাইফ টাইম এইখান থেকে থিম কিনলে আপনাকে আর কোন ফি দিতে হবে না থিম বা প্লাগিন কিনতে।
৩. ক্র্যাক থিম
Crack Theme সুবিধা হচ্ছে আপনি সকল প্রিমিয়াম থিম গুলো ফ্রিতে ডাউনলোড করে আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারবেন। এইগুলো আপনি বিভিন্ন থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।
কিন্তু ক্র্যাক থিমের সুবিধা থেকে অসুবিধার পরিমাণ বেশি। থিমফরেস্টের প্রিমিয়াম থিম গুলো কোন টাকা খরচ ছাড়াই থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিতে ডাউনলোড করা যাওয়া সত্বেও কি জন্য এগুলো মানুষ ব্যবহার করছে না? কারন ক্র্যাক থিম গুলোতে ভাইরাস থাকে। আপনি যদি কডিং না জানেন বা কডিং সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকে তাহলে আপনি এই সকল থিমের ভাইরাস আছে কিনা বুঝতে পারবেন না। আর এই ভাইরাস মুক্ত থিম ব্যবহারের ফলে অনেক সময় আপনার ওয়েবসাইট হ্যাক বা ফাইল ডিলিট এর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মখীন হতে পারে।
এছাড়াও ক্র্যাক থিম নিয়মিত আপডেট পাবেন না। ডেভেলপারদের থেকে কোনো প্রকার সাহায্য পাবেন না।
সর্বশেষ: নতুনদের জন্য অনেক সময় প্রিমিয়াম থিম কিনে ব্যবহার করাটা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ক্র্যাক থিম ব্যবহার না করে ফ্রি থিম গুলো ব্যবহার করার পরামর্শ দিলাম। কারন ক্র্যাক থিম গুলো থেকে ফ্রি থিম গুলো ১০০% সেফ যা আপনার ওয়েবসাইট এবং ওয়েবসাইট ব্যবহারকারী সুরক্ষিত থাকবে।