বাউন্স রেট যারা ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করেন বা ভবিষ্যৎ কাজ করতে আগ্রহী তারা বেশিরভাগই এই শব্দটার সাথে পরিচিত। কিন্তু অনেকেই জানি না এটা আসলে কি এবং এটার কাজ কি? চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক Bounce Rate বিস্তারিত।
বাউন্স রেট (Bounce Rate) কি?
বাউন্সরেট হচ্ছে গুগল এ্যানালাইটিক্স এর একটি মেট্রিক। এটার মাধ্যমে ওয়েবসাইটে আসা ভিজিটর গতিবিধি বা আচারন সম্পর্কে জানা যায়।
Bounce Rate হচ্ছে একজন ভিজিটর একই সময়ে ওয়েবসাইট কতগুলো পেজ ভিজিট করেছে সেটা পরিমাপ করে। অর্থাৎ একজন ভিজিটর একটা ওয়েবসাইটের একটা পেইজ বা পোস্ট ভিজিটের পর ওই ওয়েবসাইটের অন্য কোন পেইজ বা পোস্টে ভিজিট করে বা ওই প্রথম পেইজ ভিজিট করে বেরিয়ে যায় সেটা Bounce Rate এর মধ্যে বুঝা যায়।
বাউন্স রেট (Bounce Rate) ওয়েবসাইটে কি প্রভাব ফেলে?
ওয়েবসাইটের ranking এবং আয়ের ক্ষেত্রে Bounce Rate বিশেষ ভূমিকা বহন করে। ওয়েবসাইটের পোস্টগুলোর SEO যত ভালোই হক না কেন যদি ওয়েবসাইটেয Bounce Rate বেশি হয় তাহলে এটা গুগলে rank করতে কষ্ট হয়। বাউন্স রেট কম বেশি থাকলে গুগল ওই ওয়েবসাইটকে low কন্টেন্ট ওয়েবসাইট হিসাবে বিবেচনা করে।
ওয়েবসাইট যদি গুগল এডসেন্স থাকে তাহলে Bounce Rate বেশি হওয়ায় কারনে এড এ ক্লিক এর পরিমাণ কম হয় এবং ইনকাম ও কমে যায়।
এছাড়াও Bounce Rate একটা ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা আর আটিকেলের কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারনা দিয়ে থাকে।
ধরুন আমাদের ওয়েবসাইটের আটিকেল গুলো আপনার ভালো লাগে। যার ফলে আপনি আটিকেল গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়েন আবার ওই আটিকেলে রেফারেন্স দেওয়া অন্য আটিকেল গুলো পড়েন। আপনি যখন এইভাবে একটা ওয়েবসাইটের একাধিক পেজ ভিজিট করেন তখন ওই ওয়েবসাইটের Bounce Rate কমে যায় এবং এতে বোঝা যায় ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা বেশি।
ওয়েবসাইটে বাউন্স রেট (Bounce Rate) কেমন হওয়া উচিত?
ওয়েবসাইটে বাউন্স রেট যত কম হবে ওয়েবসাইটে জন্য এটা তত ভালো।
তারপরও কত Bounce Rateথাকলে ওয়েবসাইটে অবস্থান কেমন সেটা বোঝার জন্য Bounce Rate একটা মান থাকা ভালো।
এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট ও ধরন অনুযায়ী Bounce Rateএর পরিমাণ ভিন্ন হয়ে থাকে।
তবে, প্রতিটি ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে বাউন্স রেট ৭০% এর বেশি থাকা ভালো নয়।
৮০% বা এর বেশি বাউন্স রেট থাকা অনেক খারাপ
৭০%-৭৯% এর মধ্যে থাকা খারাপ
৫৫%- ৬৯% এর মধ্যে থাকলে মোটামুটি ভালো
৫০% বা এর নিচে থাকলে ভালো
তবে, blog বা এই জাতীয় ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে বাউন্স রেট ৬০% থেকে ৯০% এর মধ্যে থাকে।
বাউন্স রেট (Bounce Rate) কমানোর উপায়
১. লোডিং স্পিড
ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড বাউন্স রেট (Bounce Rate) উপর বিশেষ প্রভাব ফেলে। লোডিং স্পিড যত কম হবে তত Bounce Rate কম হয়। যদি ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড ৩ সেকেন্ডের বেশি হয় সেটা ওয়েবসাইটের জন্য ভালো নয়। কারন ৩ সেকেন্ড এর বেশি লোডিং স্পিড হলে ৩০% ভিজিটর ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে আসে।
ফলে ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট (Bounce Rate) কমানোর জন্য ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড ৩ সেকেন্ডের নিচে নিয়ে আসতে হবে।
২. ইউজার এক্সপেরিয়েন্স
ওয়েবসাইটের theme এবং ডিজাইন বাউন্স রেট কমাতে সাহায্য করে। যদি ওয়েবসাইটের ডিজাইন ইউজার ফ্রেন্ডলি না হয় তাহলে ভিজিটর দ্রুত ওয়েবসাইটের প্রতি আগ্ৰহ হারিয়ে ফেলবে এবং ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যাবে। তাই ওয়েবসাইটের theme এবং ডিজাইন সিম্পেল রাখা জরুরি।
৩. কন্টেন্ট
অনলাইনে যারা কাজ করেন তারা সবাই এটা হয়তো জানেন যে “Content is King”. একটা ওয়েবসাইটে ভাল মানের কন্টেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন। যদি ওয়েবসাইটের সাথে কন্টেন্ট এর মিল না থাকে অথবা কন্টেন্ট ভিজিটকে সঠিক তথ্য বা দিক নির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে ওয়েবসাইটের ভিজিট যেমন কমে যাবে তেমনি Bounce Rate ও বেড়ে যায়। তা বাউন্স রেট কমাতে ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট কোয়ালিটি ভালো করা প্রয়োজন।
৪. ইন্টার্নাল লিংকিং
ভিজিটরকে সাইটে বেশি সময় ধরে রাখার অন্যতম একটি উপায় হলো ইন্টার্নাল লিংকিং। ধরা যাক, আপনার ওয়বেসোইটে SEO ক্যাটাগরিতে ৪টি আর্টিকেল রয়েছে।
- বেসিক এসইও
- আউটরিচ
- গেষ্টপোষ্ট
- ব্যাকলিংক
এখন আপনি বেসিক SEO আর্টিকেলে রিলেভেন্ট ওয়েতে অন্যপোষ্টগুলো যেমন আউটরিচ, গেষ্টপোষ্ট এবং ব্যাকলিংকের পোষ্ট গুলো ইন্টার্নাল লিংক করে দিলেন। এরফলে যেটা হবে, ভিজিটর বেসিক SEO এর পাশাপাশি অণ্য ব্যাপার গুলো সম্পর্কেও জানতে আগ্রহী হয়ে লিংকে ক্লিক করবেন এবং আরো বেশি সময় সাইটে থাকবেন।
৫. অ্যাডের ব্যবহার
ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে বা আয় বাড়াতে অনেক সময় ওয়েবসাইটে অতিরিক্ত অ্যাড বা পপআপ অ্যাড ব্যবহার করে থাকি। যা ভিজিটরের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় ফলে ভিজিট দ্রুত ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যায়। Blog বা তথ্য সম্বলিত কোন ওয়েবসাইটে পপআপ অ্যাড ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া গুগল এডসেন্স এর অ্যাড এর ক্ষেত্রে একটা পেজে ৩ টার বেশি এড ব্যবহার উচিত নয়।